Wednesday, November 27, 2019

অর্শ্বের হোমিও চিকিৎসা/ঔষধ

Homeopathic medicine for hemorrhoids

এলোজ: অশ্বের বলি আঙ্গুর ফলের মত বাহির হইয়া পড়িলে ও ঠান্ডা পানিতে আরামবোধ হইলে, বাহ্যের সহিত প্রচুর বায়ু নিঃস্বরণ হইলে, মলদ্বারের উপর কোন আস্থা না থাকিলে বা বায়ু নিঃস্বরণ করিতে মলত্যাগ করিয়া ফেলিলে এ্যালোজ দিবেন। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-৮৩)।

ইস্কুউলাস হিপ: 
অর্শ্বরোগে ইস্কুউলাস হিপ একটি প্রধান ঔষধ। কটি বেদনা সহকারে সরলান্ত্রে পূর্ণতা, পরিশূষ্কতা এবং কাঠি দিয়ে খোঁচানোর মত অনুভূতি ইহার প্রয়োগ লক্ষণ। (ডাঃ ন্যাশ, পৃ: ২১৫)।
অর্শ্বরোগে ইস্কুলাস হিপ ৩০ দিনে ৩ বার একটি পরীক্ষিত ঔষধ। যদি ব্যথার সাথে সহযোগী ফিসার থাকে তবে কেবলমাত্র একমাত্রা নাইট্রিক এসিড ২০০ দিতে হবে। আরোগ্য করতে ওতেই যথেষ্ঠ। (ডাঃ পি. টি. চ্যাটার্জি)
ইসকিউলাস হিপ অর্শ্বরোগের অতীব প্রয়োজনীয় ঔষধ। অর্শ্ব হতে রক্ত¯্রাব না হলেই সাধারনত ইসকিউলাস ব্যবহৃত হয়, তবে পীড়া পুরাতন হইলে কখনো কখনো রক্ত পড়িতেও পারে জানিয়া রাখিবেন। বেদনা ও যন্ত্রনাযুক্ত অর্শ্বরোগে বিশেষ করিয়া ঐ বেদনা যদি কোমরেই বেশী হয় ও তাহা পিঠ পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এবং যাবতীয় বেদনা নড়াচড়া বা চলাফেরায় বৃদ্ধি পায়, বিশ্রামে ও ঠান্ডায় উপশম হয় তবে ইসকিউলাস হিপ একটি চমৎকার ঔষধ। রোগী মনে করে গুহ্যদ্বারে কাঁচ ভাঙ্গা বা কাঠিকুটি রহিয়াছে। নাক্স, এলোজ, কলোনসনিয়া ও হ্যামামেলিসের সাথে এর তুলনা হইতে পারে। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-৮৩, ৪৩৯)।

কলিনসোনিয়া: মনে হয় যেন মলদ্বারে গোঁজা বিঁধিয়া রহিয়াছে, অর্শ্ব হতে অতিরিক্ত রক্ত¯্রাব হয় ও কোষ্ঠবদ্ধতা থাকে, মল বলের মত শক্ত ও গোল, রোগী মনে করে গুহ্যদ্বারে কাঁচ ভাঙ্গা বা কাঠিকুটি রহিয়াছে, রাত্রিতেই যন্ত্রনা বাড়ে, অর্শ্ব ও হৃৎপিন্ডের পীড়া পর্যায়ক্রমে, ইত্যাদি লক্ষণে কলিনসোনিয়া ব্যবহার্য্য। জরায়ু ভ্রংশ পীড়ার সহিত অর্শ্ব থাকিলে কলিনসোনিয়া অব্যর্থ ঔষধ।

হ্যামামেলিস: অর্শ্ব হইতে অধিক পরিমানে রক্ত পড়িতে থাকিলে ও রক্তের বর্ণ কালচে হইলে, মলদ্বারে ও বলিতে বেদনা ও টাটানী বেশী হইলে ও কোমরে ভয়ানক বেদনা থাকিলে হ্যামামেলিস চমৎকার ফল করে। ...ইহার মাদার টিংচার বা ১এক্স দুই/এক ঘন্টান্তর সেবন করিতে দিলে রক্তপড়া বন্ধ হইয়া যায়। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-৮৩, ৪৩৯, ৪৪০)।

নাক্স ভমিকা: বাহ্যের বেগ স্বত্বেও বাহ্যে পরিষ্কার হয় না। অর্শ্ব হতে রক্ত¯্রাব হয়। মলদ্বার চুলকায় ও কুটকুট করে ইত্যাদি লক্ষণে নাক্স ভমিকা ব্যবস্থা করিবেন। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-৮৩)।

মিলিফোলিয়াম:

সালফার: সালফার অর্শ্ব রোগে সুন্দর ফল দান করে। সকালে সালফার ৩০ ও বিকালে নাক্স ভমিকা ৩০ কিছুদিন সেবনে পীড়া আরোগ্য হইয়া যায়। ইহা বহু রোগীতে পরীক্ষিত। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-১৩১)।
বায়োকেমিক ঔষধ:
ক্যাল্কেরিয়া ফ্লুরিকাম: অর্শ্বের ক্ষেত্রে এটিই শ্রেষ্ঠ ঔষধ, শ্রাবী বা অশ্রাবী উভয় প্রকার অর্শ্বের জন্য। শক্তি: ১২ এক্স, ৩০ এক্স, ৬০ এক্স। [এফ জামান, পৃষ্ঠা ৩১৫]

Tuesday, November 26, 2019

অ্যাব্রোটেনাম ঔষধ পরিচিতি

Remedy  Review: Abrotenum 

[বই ও পৃষ্ঠা: নরেন্দ্র-৬৩, এলেন-১৩, ঘোষ-৯, বোরিক-২, ভট্টাচার্য-১০৩]
* শীতকাতর (৩য়), * একপ্রকার লতা পাতার টিংচার, * গভীর টিউবারকুলার ও সাইকোটিক

মূলকথা:
১. পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রোগ বা রোগের রূপান্তর।
২. উদারাময়ে উপশম (এসিড ফস, স্যাঙ্গুইনেরিয়া)।  
৩. শীর্ণতা ও ক্ষয়দোষ, প্রবল ক্ষুধা স্বত্ত্বেও দেহ শুকাইয়া যায়।
৪. বাচালতা।

মূল্যবান কথা:
মুখের আকৃতি বুড়োদেও মত, ফ্যাকাসে, কোচকানো।
শিশুরা রাক্ষসের মত খায় কিন্তু হজম করতে পাওে না, প্রচুর মলত্যাগ করে। 
শিশু বদমেজাজী, খিটখিটে, উগ্র। নিষ্ঠুর ও নির্দয় কাজ যেমন পোকা-মাকড়কে কষ্টদেয়া করতে পছন্দ করে।

অন্যান্য কথা:
- পেট ফাঁপা। পর্যায়ক্রমে উদারাময় ও কোষ্ঠবদ্ধতা।
- কব্জিতে, গোড়ালিতে, ঘাড়ে ও বাহুতে বেদনা।
- মুখমন্ডলে থাকা রক্তবহা নাড়ীর অর্বুদ।
- দুগ্ধে সিদ্ধ রুটি ইহার প্রিয় খাদ্য।

কয়েকটি ব্যবহার:
* শিশুদের শীর্ণতারোগের একটি বহুল ব্যবহৃত ঔষধ। বিষেশত নিম্নাঙ্গের শীর্ণতা, যদিও ক্ষুধা প্রচুর থাকে। (আইওডি, স্যানিকি, টিউবার,)। সাইকোসিস ও সিফিলিস জনিত শুকাইয়া যাওয়ায় মেডো ও সিফিলিনামও দুটি শ্রেষ্ঠ ঔষধ। (ক্ষুধা স্বত্বেও শরীর তথা ঘাড়ের পিছনের দিকটা শুকাতে থাকে -নেট্রাম মি.)। সবশেষে শিশুর গলদেশটি এত শীর্ণতাপ্রাপ্ত হয় যে রোগী মাথাটি সোজা করিয়া রাখিতে পারে না।
* ছেলেদের নাভিদিয়া রস-রক্ত পড়া, নাকদিয়া রক্তপড়া, অন্ডকোষ ফোলা ও তাহার সহিত দেহ শুকাইয়া যাইতে থাকিলে ইহা বিশেষ ফলপ্রদ। - কেন্ট।

Monday, November 25, 2019

অনিদ্রার হোমিও ঔষধ/ চিকিৎসা

Homeopathic Medicine for Sleeping Disorder/Sleeplessness/Insomnia

নাক্স ভমিকা:
অনিদ্রা জনিত কারনে রোগ বা রোগ জনিত কারনে অনিদ্রা উভয় ক্ষেত্রেই নাক্স ভমিকা ফলপ্রদ। অনিদ্রা বা অতিরিক্ত মানষিক পরিশ্রম জনিত কারনে উন্মাদভাব দেখা দিলেও নাক্স ভমিকা ব্যর্থ হইবার নহে। (ডাঃ নরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
অধিক মানষিক পরিশ্রম, অধ্যয়ন বা রাত্রি জাগরন জনিত অসুস্থতা; রোগী ঘুমের জন্য ব্যাকুল অথচ ঘুম আসে না, এই অবস্থায় নাক্স প্রযোজ্য।

রাওলফিয়া: উচ্চরক্তচাপ হেতু অনিদ্রায় রাওলফিয়া সার্পেন্টিনা কিউ ১০ ফোঁটা। প্রয়োগের অনতিকালের মধ্যেই নিদ্রার কোলে শান্তি লাভ হয় (ডাঃ এলেন)।

কফিয়া: কফিয়া অনিদ্রার একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। কাজকর্ম সম্বন্ধীয় ভীষন চিন্তার ফলে নিদ্রানাশ হলে কফিয়া উত্তম ফলদান করে। ...শক্তিকৃত কফিয়া অনিদ্রার মহৌষধ। ইহা যদি সত্যি না হয় তবে হোমিওপ্যাথি মিথ্য। ...আনন্দ সংবাদের মানষিক উত্তেজনা বশতঃ অনিদ্রাতেও কফিয়া কার্যকরী। তাছাড়াও-
মৃত্যু সংবাদ জনিত অনিদ্রায় - নেট্রাম মিউর।
কাহারো উপর ক্রোধ জনিত অনিদ্রায় - স্ট্যাফিসেগ্রিয়া।
চুলকানির জন্য অনিদ্রায় - এ্যানাকার্ডিয়াম।
ভয় ও ভাবনাসহ অনিদ্রায় - ককুলাস।
রস-রক্তাদি ক্ষরণের জন্য অনিদ্রায় - চায়না।
শোকাতুর ব্যাক্তির অনিদ্রায় - ইগ্নেশিয়া। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-২৮১)।

প্যাসিফ্লোরা: শিশু ও বৃদ্ধাদের অনিদ্রা রোগের একটি মহৌষধ। মূল আরিষ্ট ২০-২৫ বিন্দু মাত্রায় সেব্য। ( এন সি ঘোষ, পৃষ্ঠা- ৫২৫)।

এমব্রাগ্রিসিয়া: ব্যবসায় ও সাংসারিক ভাবনা-চিন্তর জন্য অনিদ্রা হইলে, সাথে আক্ষেপ ও পেশীর স্পন্দন থাকিলে, পরিশ্রান্ত ও ক্লান্ত হইয়া শয়ন করিলেও নানা ঝঞ্ঝাটের চিন্তায় ঘুম না আসায় জাগিয়া থাকিতে হয়। সময়-সময় রোগী অনিদ্রার জন্য বিছানা ছাড়িয়া হাঁটিয়া বেড়ায়, ইত্যাদি লক্ষণে এমব্রাগ্রিসিয়া ফলপ্রদ ঔষধ। (এস. এস. হুসাইন, পৃ-৪৬১)।

বায়োকেমিক ঔষধ:
কেলি ফস: অর্ধ-শিরশূল ও অনিদ্রা রোগের মহৌষধ। ৩০এক্স সেব্য। [এফ জামান, পৃষ্ঠা-৩২২]